নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক স্মরণসভায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সরকার প্রকৃত তথ্য ধামাচাপা দিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘মানুষকে বিপদে রেখেও বিপদের কথাটা জানতে দিচ্ছেন না। সে কারণে সামনে মানুষ বিপদে পড়তে পারে।
জাপার সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলুর স্মরণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান বলে জানান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে সবার চেয়ে আমাদের দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেশি। মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ টাকার অবমূল্যায়ন। এখন ডলার কিনতে গেলে বেশি টাকা দিতে হচ্ছে।’
রিজার্ভের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘দিনকে দিন টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে আমাদের রিজার্ভ আস্তে আস্তে নিচের দিকে চলে আসছে। সরকার কী বলছে তা জানি না, তবে বাজারে ১১৯ থেকে ১২০ টাকা করে ডলার কিনতে হচ্ছে।’
জি এম কাদের আরও বলেন, ‘নতুন করে ঋণ পরিশোধের বোঝা চাপলে রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় যেতে বেশি দিন সময় লাগবে না। আমরা একটা ডেঞ্জার জোনে বাস করছি। এখন পর্যন্ত আমাদের যতটুকু রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে পণ্য কিনতে পারছি না। বিভিন্নভাবে এলসি করতে গেলে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। সামনে যখন এই ঋণ শোধ শুরু হবে, তখন সংকট আরও বাড়তে পারে।’
দেশের নির্বাচনব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করছে না বলেও মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘মানুষের যে ক্ষমতা ছিল, চাইলে তারা সরকার বদল করতে পারে। সে ক্ষমতা বিভিন্নভাবে বিধ্বস্ত করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে, এই আস্থা মানুষের মধ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সরকারও জবাবদিহি ছাড়া চলতে পারছে। তারা দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে খালি করে দিচ্ছে। দেশটা ফোকলা করে দিচ্ছে।’
ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে কী করতে হবে, তা দলের নেতা–কর্মীদের বিবেচনা করার অনুরোধ জানান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে পেছনে টেনে ধরার সরকার চাই না। যে সরকার দেশের মানুষকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে, অন্ততপক্ষে বাধাগ্রস্ত করবে না, সেই ধরনের সরকার দেশ শাসন করুক, এটাই চাই। দেশের মানুষকেও সেই অধিকার দিতে হবে।’
মানুষের মুখ বন্ধ রাখতে একের পর এক কালাকানুন তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আইন করে আমরা বাধাগ্রস্ত করছি। আমরা মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছি না। সংবাদপত্রকে সঠিকভাবে খবর প্রচার করতে দিচ্ছি না। আমরা বিভিন্নভাবে কালাকানুন করে মানুষের মুখ স্তব্ধ করে দিচ্ছি। এটা একটি দেশের গণতান্ত্রিক রীতি হতে পারে না।’
Post a Comment