দুর্গাপুরে আ' লীগ নেতাকে দাদন ব্যবসায়ীর হত্যার হুমকি: থানায় জিডি


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 
রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রুস্তম আলীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছে আলোচিত দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ। গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা রুস্তম আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদসহ তার লোকজন এসে প্রকাশ্যে এই হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই রুস্তম বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানা মাসুদের নাম উল্লেখ্য করে তিনজনের বিরুদ্ধে একটি  সাধারণ ডায়েরি (১৪২৪) করেন। 

আওয়ামীলীগ নেতা রুস্তম আলী অভিযোগ করে বলেন, দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ দীর্ঘদিন থেকে এলাকা সহজ সরল মানুষদের কাছ থেকে  ফাঁকা ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে চড়া সুদে টাকা দিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত করেছেন।  সুদে-আসলে জমা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে তার ভয়ে অনেকেই ঘর ছাড়া হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ধরমপুর গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী রায়হানুল ইসলাম আমার ভাগিনা। সে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদের কাছ থেকে সুদের উপর ৮০হাজার টাকা নেয়। সেই টাকার সুদের ৩০হাজার টাকা পরিশোধ করলেও উল্টো দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ সুদে-আসলে ১লাখ ৫০হাজার টাকার দাবি করে বসেন।
এমন কি হঠাৎ করেই ভাগিনা রায়হানুলকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং মুদির দোকানও বন্ধ রয়েছে। চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে রায়হানুলের বাবা আঃ রহমান বাদি হয়ে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। এ ঘটনার জের ধরেই শনিবার দুপুরে জোরপূর্বক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে লোকজন নিয়ে মাসুদ  প্রবেশ করে মেরে ফেলে লাশ গুম করে দিবেন বলে হুমকি প্রদান করে। আমিও আমার পরিবার এখন তার ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। 
উল্লেখ্য  "সুদের টাকার জন্য  ধরমপুর গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ মুদি ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। গত  সোমবার (২৫এপ্রিল) রায়হানুল ইসলামের মুদির দোকানে প্রবেশ করে জোরপূর্বক দোকানের চুক্তিপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং হুমকি দিয়ে আসেন। দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে তোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। এমনকি আমার  বড় ছেলে এবং পরিবারকেও দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ হত্যার হুমকি দেয়।" গত দুইদিন থেকে মুদি ব্যবসায়ী রায়হানুল নিখোঁজ। তার কোন সন্ধানও পাচ্ছিনা। 
এদিকে সুদের টাকার জন্য  রায়হানুলের খোঁজ পেতে মরিয়া হয়ে উঠছেন দাদন ব্যবসায়ীরা। গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় রায়হানুলকে না পেয়ে এখন দাদন ব্যবসায়ীরা তাঁর পরিবারকে চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এ ঘটনায় রায়হানুলের পরিবার অসহায় জীবনযাপন করছে। 
এর মধ্যে আবার  দাদন ব্যবসায়ীরা এখন আমার পরিবারকে সুদের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। দাদন ব্যবসায়ী মাসুদের ভয়ে আমার ছেলে নিখোঁজ হয়েছে। আমি বাদী হয়ে এঘটনায় দাদন ব্যবসায়ী মাসুদের বিরুদ্ধে  দুর্গাপুর থানা লিখিত অভিযোগ করেছি। 
এদিকে, রায়হানুলই নয় দাদন ব্যবসায়ী মাসুদের ফাঁদ থেকে রক্ষা পায়নি  কিসমত গনকৈড় ইউনিয়নের উজালখলসী গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক সুমন আলী,আলিপুর মডেল কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলামসহ নাম না জানা আরো অনেকেই রয়েছেন। প্রকাশ্যে এমন দাদন ব্যবসায়ীর ফলে নানা প্রকার অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এতে ভেঙ্গে পড়েছে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা।
এমনকি গত মাসে অনেক ভুক্তভোগী তার অত্যাচারের শিকার হয়ে থানা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ধরমপুর গ্রামের  দাদন ব্যবসায়ী মাসুদের কাছে হত্যার হুমকির ব্যাপারে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে সে জানান,আমি তাকে হত্যার হুমকি দিইনি। উল্টো রুস্তম আমাকে বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি দেখান। যার কারণে আমি বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি(১৪২৭) 

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) বলেন,থানায় এসে রুস্তুম সাধারন ডায়েরি করেছে। ডায়রি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি আরো বলেন,দাদন ব্যবসা বেআইনি। এ বিষয়ে  তদন্ত করে দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0/Post a Comment/Comments