নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা: রাজশাহী বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র উপকারভোগীদের কার্ড জমা নিয়ে স্লিপের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মধ্যে উত্তেজনা ও ধাক্কাধাক্কি ঘটনা ঘটেছে।
আজ, মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাকিম উদ্দিনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) জুয়েল আহম্মেদ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
জানা যায়, গত মাসে টিসিবি’র পন্য বিতরণের সময় চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান উপকারভোগীদের নামের সাথে ছবির মিল না থাকায় ২২৬ জনের কার্ড রেখে দেন। মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে চেয়াম্যানের কাছে ওই সকল ব্যক্তিরা পণ্য ক্রয় করতে এসে কার্ড ফেরত চান। চেয়ারম্যান কার্ড না দিয়ে স্লিপের মাধ্যমে পণ্য নিতে বলেন।
বিষয়টি ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর শাকিম উদ্দিনকে অবগত করেন। এ নিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বরের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ধাক্কাধাক্কি এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) জুয়েল আহাম্মেদ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এ বিষয়ে টিসিবির ডিলার জুনায়েদ আহমেদ সরকার বলেন, নির্ধারিত ৪৭০ টাকা মূল্যে প্রতিজনের কাছে ২ লিটার সোয়াবিন, ২ কেজি মসুর ডাল ও ৫ কেজি চাল বিক্রি শুরু করা হয়। এর আগে চেয়ারম্যানের কাছে কার্ড জমা দেওয়া উপকার ভোগীদের কার্ড না দিয়ে স্লিপ দেন। এতে অনেকে স্লিপ না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে মেম্বরকে অবগত করলে অনাকাংক্ষিত একটি ঘটনা ঘটে।
বাউসা ইউনিয়নের উপকারভোগী ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাসানুজ্জামান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়া গ্রামের কালাম মন্ডল, শ্রীরাম পাড়া গ্রামের শ্রীদাম মন্ডল, সমর কুমার মন্ডল, আজিজুল আলম, ১ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘা গ্রামের আয়ুব আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অমরপুর গ্রামের রনজনা বেগম বলেন, গত মাসে টিসিবি’র পণ্য নেওয়ার সময়ে কার্ড জমা নেয় চেয়ারম্যান। জমাকৃত কার্ড নিতে গেলে তিনি কার্ড দেয়নি এবং স্লিপও দেয়নি। এ নিয়ে মেম্বর শাকিম উদ্দিনকে অবগত করা হলে কিছুক্ষনের মধ্যে হুড়োহুড়ি ও উত্তেজনা শুরু হয়।
বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর শাকিম উদ্দিন বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিলারের কাছে উপকারভোগীরা নিজেরা কার্ড জমা দিয়ে পণ্য ক্রয় করবেন। কিন্তু চেয়ারম্যান সেই নিয়ম ভঙ্গ করে চেয়ারম্যান কার্ড জমা নিয়ে স্লিপ দেন। এতে অনেকে কার্ডও পায়নি আবার অনেকে স্লিপও পায়নি। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান আমাকে ধাক্কা দেন। আমিও তাকে ধাক্কা দিয়েছি।
উপজেলা বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান বলেন, অনেকের কার্ডের সাথে ছবির মিল নাই। যাচাই বাছাইয়ের জন্য গত মাসে সবার কার্ড জমা নেওয়া হয়েছে। পরে কার্ড না দিয়ে স্লিপ দেওয়া হয়েছে। যাদের ছবির সাথে কিংবা জাতীয় পরিচয় পত্রের মিল পাওয়া যায়নি তাদের স্লিপ দেওয়া হয়নি। সেক্ষেত্রে কেউ বাদ পড়তে পারে। এ নিয়ে ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বরের সাথে বাকবিতন্ড হয়। তবে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) জুয়েল আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
Post a Comment