পুঠিয়া রাজশাহী প্রতিনিধি:
পুঠিয়ার চুরির অপবাদ সইতে না পেরে আলম মন্ডল (৬০) নামে এক নৈশ্য প্রহোরি আত্মহত্যা করেছে। গত রাত আনুমানিক ২ টার সময় ঝলমলিয়া বাজারে সামিম হার্ডওয়্যারের দোকানের বারান্দার কাঠের ডাসার সাথে গলায় রশি পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
নিহত আলম মন্ডল নাটোর সদর উপজেলার পাইকপাড়া (রায়পাড়া) গ্রামের শামসুল কুলির ছেলে।
জানা যায়,মৃত আলম মন্ডল বিগত ৪ বছর যাবত পুঠিয়া উপজেলা ঝলমলিয়া বাজারে নৈশ প্রহরীর চাকরি করতেন।
গত ০১ ফেব্রুয়ারি তারিখে রাত্রীর যে কোনো সময় আবু বক্কর সিদ্দিক এর ট্রাকের একটি রিংসহ টায়ার ঝলমলিয়া বাজার হতে হারিয়ে যায়। টায়ার হারিয়ে যাওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে ঝলমলিয়া বাজার কমিটি সাধারণ সম্পাদক সেলিম সরকার ৮ জন নৈশ্ প্রহরীদের তার অফিসে ডেকে মিথ্যা টায়ার ও রিং চুরির অপবাদ দেয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেযে আশেপাশে আলম মণ্ডল কে দেখতে পেয়ে চুরির বিষয়টি তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
তখন থেকে আলম মন্ডল মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন পুঠিয়া থানা পুলিশ।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য, ২০১৪ সালে অশান্ত ভট্টাচার্য নামে এক ট্রাক ড্রাইভার এর ওপর ঠিক একইভাবে ট্রাক চুরির অপবাদ তুলে দিয়েছিলেন এই প্রভাবশালী মহল। পরবর্তীতে উক্ত ট্রাক ড্রাইভার অশান্ত ভট্টাচার্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। উক্ত বিষয়টি কিছু প্রভাবশালী মহল টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়ে দেয়। এমনটায় জানিয়েছেন মৃত ট্রাক ড্রাইভারের ছেলে লেমন ভট্টাচার্য।
নৈশ প্রহরীর বড় বোন লিপি ও তার ছোট মেয়ে ঝর্ণা জানিয়েছেন,তাদের পারিবারিক কোনো কোন্দোল ছিল না। মিথ্যা চোরের অপবাদ দিচ্ছিল সেলিম ও তার ভাই আবু বাক্কার। গতরাতে প্রতিদিনের ন্যায় সে কাজে বের হয় কিন্তু রাতে আমরা শুনতে পাই গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ভুক্তভোগির চাচাতো ভাই আরমান বলে, আমার ভাই আলম গলায় ফাঁসি দিয়ে মরতেই পারে না! হয়তো কেউ তাকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ঝলমলিয়া বাজাবের নৈশ প্রহরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডলার বলে,নৈশ প্রহরীর দ্বায়িত্ব বাজারের দোকান পাহারা দেওয়া, বাজারের বাইরে কারো কোন জিনিস পাহারা দেওয়া তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
নৈশ প্রহরী আলম চুরির সাথে জড়িত কিনা? এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানায়, চুরি হওয়া ট্রায়ার ও রিং যে ভ্যান দিয়ে বহন করা হয়েছে সেই ভ্যানচালক কে মৃত আলম চিন্তে পারায় ভ্যানচালকসহ তাকে জিজ্ঞাসা করলে উক্ত চুরির সাথে মৃত আলম জড়িত কিনা তার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উক্ত ট্রাক মালিক আবু বক্কার সিদ্দিকের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায়, আমার ট্রাকের ট্রায়ার ও রিং হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কারো কাছে আমি অভিযোগ করিনি বলে ফোন কেটে দেয় ট্রাক মালিক।
এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতালে পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিব।
Post a Comment