দুর্গাপুরে চাহিদার অর্ধেক মিলছে বিদ্যুৎ, দুর্ভোগে ৫৬ হাজার গ্রাহক


রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ -ছবি : প্রতিনিধি

রাজু আহমেদ:

রাজশাহী দুর্গাপুরে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে প্রায় ৫৬ হাজার গ্রাহক অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।এ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করা হলেও বিদ্যুৎ বিভাগ কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। এখানে দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্ধেক সময়ও গ্রাহকরা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। এতে আমন ধান চাষিরা সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। বিদ্যুতের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও। এমন পরিস্থিতিতে জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ৫৬ হাজার গ্রাহকের ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেকের কম মাত্র ৮ মেগাওয়াট। ফলে দেখা দিয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং। এদিকে লোডশেডিং ও অনাবৃষ্টিতে সেচ সঙ্কটে আমন আবাদের ফলন বিপর্যয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। এছাড়াও চার্জার ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও অটোচালকেরা পড়েছে বিপাকে। রাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় গাড়িতে চার্জ দিতে না পেরে রাস্তায় গাড়ি নামাতে পারছেন না তাঁরা।

আমনচাষিরা জানান, বৃষ্টির পানিতে আমন রোপন করলেও এখন অনাবৃষ্টিতে চরম বেকায়দায় পড়েছেন তারা। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে আমনের জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। দিন ও রাতে দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে ৪ থেকে ৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে ব্যাটারী চালিত গাড়ির চালকরাও রয়েছে ভোগান্তিতে। গাড়িতে চার্জ দিতে না পারায় সড়তে গাড়ি নামাতে পারছেন না তারা। ফলে সীমাহীন দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।

উপজেলার ঝালুকা ইউনিয়নের কাঠালবাড়ীয়া গ্রামের অটোরিকশাচালক সালাউদ্দিন হোসেন জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ করতে পারছেন না। এতে তাদের আয় কম হচ্ছে।

উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের পারিলা গ্রামের বাসিন্দা রানা হামিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে রাতে তার এলাকায় প্রায় অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না। রাতের শেষভাগে বিদ্যুতের দেখা মিললেও সকালে আবার চলে যায়। দীর্ঘক্ষণ পর দুপুরে বিদ্যুৎ এলেও কিছুক্ষণ থেকে আবার চলে যায়।

দুর্গাপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মাহাবুর রহমান জানান, দুর্গাপুর উপজেলার ৫৬ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের জন্য ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৮ মেগাওয়াট। ফলে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় লোডশেডিং হওয়াটা স্বাভাবিক।পুরো বরাদ্দ পেলে এ সমস্যা থাকবে না বলে তিনি জানান।

0/Post a Comment/Comments